কোলোন্তাইয়ের কথাসাহিত্য : ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক

কোলোন্তাই সম্পর্কে শতাব্দী ধারাবাহিকভাবে লিখছেন অন্যস্বর পত্রিকায়। এটি চতুর্থ পর্ব। আগের পর্বগুলি সংশ্লিষ্ট লিংক থেকে পড়া যাবে।

প্রথম পর্ব - https://othervoice.in/article/ov-7-11-23-5

 দ্বিতীয় পর্ব - https://othervoice.in/article/ov-7-12-23-4

তৃতীয় পর্ব - https://othervoice.in/article/ov-7-1-24-3

রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে বিশেষভাবে সক্রিয় কেউ যখন সাহিত্যচর্চা করেন, তখন তাঁর সৃষ্টিশীল দিকটি গৌণ হয়ে যায়। কারণ সাহিত্য— তা সত্যের প্রতিফলনই হোক, বা হোক স্রষ্টার একান্ত অবলোকন— নিতান্তই অহৈতুকী। তার প্রত্যক্ষ ভূমিকা নেই কোনো ডামাডোলে। তা সময়কে ধরে রাখতে পারে, না-ও রাখতে পারে; সমাজবদলের অনুপ্রেরণা হতে পারে, আবার না-ও হতে পারে। সাহিত্য ব্যতিরেকে রাজনীতি ও সমাজনীতি নির্ধারণ বিলকুল সম্ভব।

এতদসত্ত্বেও, ঊনবিংশ শতকের বিশের দশকে বিশিষ্ট বলশেভিক বিপ্লবী আলেকজান্দ্রা কোলোন্তাই বেশ কিছু গল্প লিখেছিলেন। গল্পগুলি দুটি খণ্ডে সংগৃহীত হয়েছিল। সমসময়ে তো বটেই, পরবর্তীকালে ইংরেজি অনুবাদের পরেও, তা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হয়েছিল। কোলোন্তাইয়ের গল্পগুলি বহুলপঠিত নয়। নান্দনিক মূল্য নির্ধারণও যে খুব হয়েছিল, তা বলা যায় না। গল্পগুলি সুলিখিত, তবে তারা স্পষ্টত কোলোন্তাইয়ের জীবনদর্শন ধারণ করে। লেখকের জীবন এবং রাজনীতির প্রেক্ষাপটে স্থাপন করে তাদের পাঠ করা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে।

কিশোরী বা যুবতী কোলোন্তাই ছিলেন সাহসী লিখিয়ে ও পড়ুয়া। জোয়া শাদুরস্কায়ার বয়জ্যেষ্ঠা বান্ধবীদের সংস্পর্শে তিনি বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন যে মেয়েদের জীবনেও গেরস্তালির চেয়ে মহত্তর কোনো  উদ্দেশ্য প্রয়োজন। ১৮৯৩ সালে বাবা-মার বিরুদ্ধে গিয়ে যাঁকে বিয়ে করলেন, যাঁর সম্পর্কে আক্ষেপ করবেন আশি বছর বয়সে যে অমন ভালোমানুষকে কষ্ট দিয়ে ঠিক করেননি, সেই ভ্লাদিমির কোলোন্তাই ছিলেন কারখানা পরিদর্শক৷ আলেক্সান্দ্রা কারখানা দেখতে গিয়ে শ্রমিকদের অমানুষিক কষ্ট দেখে বিহ্বল হলেন। ১৮৯৪ সালে যখন রাজনৈতিক কাজ শুরু করেন, যখন তিনি সদ্য মা। ১৮৯৬ নাগাদ সম্পর্কে ফাটল স্পষ্ট হল রাজনৈতিক মতাদর্শের তফাতের জন্য।

১৯০৫ সালের বিপ্লবের সময়, নারী শ্রমিকদের সংগঠিত করার জন্য বুর্জোয়া নারীবাদী এবং সমাজবাদী, উভয় শিবিরই চেষ্টা করেছিল৷ ১৯০৮ সালে কোলোন্তাই ‘নারীপ্রশ্নের সামাজিক ভিত্তি’ বইটি লেখেন, যা রুশ বিপ্লবের পরে কখনও পুনঃমুদ্রিত হয়নি, এমনকি তাঁর রাশিয়ান ভাষায় নির্বাচিত রচনাগুলিতেও শুধুমাত্র ভূমিকাটি আছে। এর ফলে আমরা বুর্জোয়া নারীবাদের প্রতি কোলোন্তাইয়ের সমালোচনা পেলাম। কিন্তু সমাজতান্ত্রিক রাজনীতির লিঙ্গপ্রশ্নহীন প্রকৃতির সমালোচনাগুলো চেপে দেওয়া হল, সেগুলি আর পেলাম না। লেখাটি যৌনতার প্রশ্নগুলিকেও রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত করে।

১৯১৭ সাল পর্যন্ত তিনি বক্তা, লিফলেট লেখক এবং বলশেভিক নারীদের কাগজ রাবোতনিতসা-এর কর্মী। বিবাহ, প্রেম, মনোগ্যামি, পলিগ্যামি ইত্যাদি নিয়ে তাঁর বক্তব্য ও প্রবন্ধগুলি, বিপ্লবের পরে, ১৯১৮ সালে, ‘শ্রমিক শ্রেণির নব নৈতিকতা’ নামে প্রকাশ পায়। ১৯২০ সালে অনুষ্ঠিত পার্টির একাদশতম কংগ্রেসে তিনি ‘ওয়ার্কার্স অপোসিশন’-এ যোগ দেন। (আগের পর্বে এ নিয়ে বিশদে আলোচনা আছে)।  ১৯২২-২৫ সালে, ক্রমবর্ধমান বিরোধিতার মুখেই সম্ভবত, তিনি পার্টি ও রাষ্ট্রের সম্পর্কে খোলাখুলিভাবে লেখা বা কথা বলা বন্ধ করে দেন। এই দশকের শেষের দিকে এই প্রত্যাহার সম্পূর্ণ হয়। আবার ঠিক এই দশকেই তিনি গল্প লিখতে শুরু করেন। যে কথাগুলো নিজের জবানিতে বলা যাচ্ছিল না, সেই কথাগুলোর বাহক কি গল্পগুলো? 

কোলোন্তাইয়ের কথাসাহিত্য গভীরভাবে রাজনৈতিক এবং তীব্রভাবে ব্যক্তিগত। তার প্রথম গল্পের সংকলন ছিল ‘বাঁকের মুখে নারীটি’ ( ইংরেজি অনুবাদে ওম্যান অ্যাট দ্য টার্নিংপয়েন্ট)। এই সংগ্রহের গল্পগুলির মধ্যে একটি হল ‘এক মহান প্রেম’। গল্পটিকে প্রায়শই লেনিন এবং ইনেসা আরমান্ডের অনুমেয় সম্পর্কের প্রতিচ্ছবি মনে করা হয়, কিন্তু আসলে এ ছিল মেনশেভিক মতাদর্শী মাসলভের সাথে কোলোন্তাইয়ের নিজের সম্পর্কের প্রতিফলন। গল্পটি এই বিক্ষুব্ধ উপসংহারে পৌঁছেছে যে, বিষমকামী সম্পর্ক পারস্পরিক দোষারোপের মধ্য দিয়েই শেষ হয়। এর বদলে নারীরা বরং আত্ম-তে মনোনিবেশ করুক। প্রবন্ধগুলির চেয়ে তীব্রতর ক্রোধের সঙ্গে, কোলোন্তাই এখানে ঘোষণা করেছিলেন যে, বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংস হয়ে গেছে, কারণ কীভাবে ভালবাসতে হয় তা মানুষ জানে না।

১৯২৩ সালে দ্বিতীয় গল্প সংকলন-টি বেরোয়, যার নাম ‘শ্রমিক মৌমাছির প্রেম।’ দীর্ঘতম গল্পের নায়িকা এক কমিউনিস্ট মহিলা যিনি সংসারের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন বিপ্লবকে। বিপ্লবের বছরে ভ্লাদিমির এবং ভাসিলিসার দেখা হয়েছিল। ভাসিলিসা মস্কো ছেড়ে ছোট শহরে চলে যায়, কারণ ভ্লাদিমির সেখানে একটি কারখানার পরিচালক। ভাসিলিসা আবিষ্কার করে NEP-এর রাশিয়াতে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তি হওয়ার অর্থ কী। তাদের বিচ্ছেদ ঘটে, যতটা না ভ্লাদিমিরের অন্য সম্পর্কের জন্য, তার চেয়ে বেশি ভাসিলিসা জীবনের অন্য মানে খুঁজে পাওয়ায়। ভাসিলিসা কোলোন্তাইয়ের স্বপ্নের সেই নতুন নারী, যৌন ঈর্ষা থেকে অনুভূতির স্বাধীনতায় যার উত্তরণ ঘটে। ভাসিলিসা মনে করেছিল, একজন কারখানা-পরিচালকের স্ত্রী হিসাবে তার জীবন গ্রহণযোগ্য নয়। ভ্লাদিমিরের প্রতি আনুগত্যের চেয়ে পার্টির প্রতি আনুগত্য সে বেছে নিয়েছিল। সে নিনাকে করুণা করে, কারণ নিনা-দের সেই ধরনের সুরক্ষা দরকার যা ভ্লাদিমিররা দেয়। ভ্লাদিমিরের সঙ্গে সংলাপে ভাসিলিসা জানায়, নারীর শুদ্ধতা তার কুমারীত্বে নিহিত নেই। খানিক করুণাবশতই নারী-ক্যামরেডারির কারণে নিনাকে ভাসিলিসা শেষ চিঠিতে ‘বোন’ সম্বোধন করে।

এদিকে এই সংকলনের আরেকটি গল্পের নাম ‘সেস্ত্রি’ (বোন)। এই গল্পের কথক নারীটি হতাশাগ্রস্ত। সন্তানের বারংবার অসুস্থতার কারণে সে চাকরি হারায়। শিশুর মৃত্যুর পরও তাকে ফেরত নেওয়া হয়নি, কারণ তার কর্তা সুচাকুরে, তাই তার চাকরির প্রয়োজন নেই। তার জীবন একজন মাতাল স্বামীকে ঘিরে আবর্তিত হয়। এই কর্তাটি NEP-এর রাশিয়ায় সুবিধাভোগী হিসাবে আনন্দে মশগুল৷ গল্পটি দেখায় যে NEP-এর কারণে তহবিলের অভাবে ক্রেশ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, এবং স্বামীরা স্ত্রীদের চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য করছে। NEP-এর সমালোচনা এভাবেই গল্পগুলোতে বারেবারে আসে। আলোচ্য সম্পর্কটি শেষ হয়ে যায়, যখন পুরুষ একজন বেশ্যাকে বাড়ি নিয়ে আসে। এই নারীর সঙ্গে কথা বলে কথক আবিষ্কার করে যে তাদের দুজনের পরিস্থিতি কতক একই রকম। সে মেয়েটিকে সাহায্য করার চেষ্টা করে, যদিও ক্ষমতা তার সীমিত। মেয়েটির হাতে সে তার শেষ বেতনের প্যাকেটটি তুলে দেয়।

সম্ভবত যে গল্পটি কোলোন্তাইকে সবচেয়ে বেশি কুখ্যাতি এনে দিয়েছে তা হল ‘তিন প্রজন্মের প্রেম’। ওলগা সের্গেভনার মা, ওলগা সের্গেভনা এবং তার মেয়ে ঝেনিয়া, তিন প্রজন্মের নারী তিনভাবে যৌন মুক্তিকে দেখেছিলেন। ওলগার মা এবং তার প্রজন্মের অন্যান্য পুরুষ-নারীরা তখন সমাজতন্ত্রী বুদ্ধিজীবী। নারী মুক্তিও তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এই গল্পটি কোলোন্তাইয়ের মাকে মনে করিয়ে দেয়। কোলোন্তাই এক যুগান্তরের সন্তান। তাঁর জন্মই এক সামাজিক বিবৃতি, কারণ প্রেমিককে ফেলে অন্যত্র বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিলেন কোলোন্তাইয়ের মা। তাঁরও নাম আলেকজান্দ্রা। সন্তানদের নিয়ে গর্ভবতী আলেক্সান্দ্রা সেনা ক্যাপ্টেন দোমোন্তোভিচ, অর্থাৎ সেই প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যান। সেই প্রণয়ের সন্তান আলেক্সান্দ্রা কোলোন্তাই, যদিও দিদিরা মায়ের পুরোনো বিবাহের সন্তান৷ যে নারী অভিজাত পরিবারের বধূ, তিনি অন্যের সন্তান গর্ভে ধারণ করছেন, এ ছিল যথেষ্ট কলঙ্কময়৷ বস্তুত বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে এই কারণেই চার্চ আপত্তি করেনি; নাহলে সহজে বিচ্ছেদ ঘটতে দেওয়া সেযুগের চল ছিল না। অর্থাৎ প্রচলিত নৈতিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধাচরণ করা কোলোন্তাই মাতৃক্রমে পেয়েছিলেন, যদিও পরবর্তীকালে তাঁর সঙ্গে এই মায়েরই নৈতিক সংঘাত বাধে নানা ক্ষেত্রে। এই ঘটনার আংশিক প্রতিফলন আমরা দেখতে পাব গল্পে।

ওলগা নিজে আন্ডারগ্রাউন্ড বিপ্লবী৷ সে একই সঙ্গে কনস্ট্যানটিনের স্ত্রী ও আরেক বিপ্লবী এম-এর প্রেমিকা, যার দ্বারা সে গর্ভবতীও হয়। অথচ সে দুজনের কাউকেই বাদ দিতে চায় না। সে প্রশ্ন করে, দুজনকে ভালবাসা কেন অসম্ভব? ক্রমে দুজনের সঙ্গেই তার রাজনৈতিক মতপার্থক্য হয়। দুটি সম্পর্কেরই মেয়াদ শেষ হয়। বিদেশে থাকার সময় ওলগা আরেক স্বল্পবয়সী তরুণ কমরেড রিয়াবকভের ঘনিষ্ঠ হয়। এক পর্যায়ে ওলগা আবিষ্কার করে, তার মেয়ে ঝেনিয়াও রিয়াবকভের সাথে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত। ঝেনিয়ার স্বীকারোক্তি অনুসারে, সে রিয়াকভ সহ অনেক পুরুষের সঙ্গেই যৌনভাবে মিলিত হয়েছে, কিন্তু কাউকেই ভালবাসে না।  বিপ্লবোত্তর রাশিয়ার বেঁচে থাকার ভয়ানক সংগ্রামের মধ্যে স্থিতিশীল সম্পর্কে আবদ্ধ হতে চায় না ঝেনিয়ারা। এ মুক্তি না অস্থিতিশীলতা, তা ওলগা বুঝতে পারে না।

এই গল্পটিকে ‘মেক ওয়ে ফর উইংড ইরোস’ প্রবন্ধের পাশাপাশি বসানো যায়। কিন্তু ঝেনিয়ার প্রেম কি ডানা পেল আদৌ? ঝেনিয়ার জীবনও যেন অনেকটা 'ডানাহীন ইরোস'-এর মতোই। তাই ঝেনিয়াকে রোলমডেল হিসেবে উপস্থাপিত করা হয়েছে, তা বোধহয় বলা যায় না। সোভিয়েত সমাজ ১৯২০-র দশকের গোড়ার দিকে বিভিন্ন ধরনের সম্পর্কের অভিজ্ঞতা লাভ করেছিল। এই সংকটের প্রতিক্রিয়া হিসাবে কোলোন্তাই ‘নতুন নৈতিকতা’-র ধারণাটি ব্যক্ত করেছিলেন। গল্পটিকে একটি সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে দেখা যায়। এছাড়া গল্পের মূলে আছে, আরও একবার, নারীত্বের বন্ধন। ঝেনিয়া রিয়াবকভকে ভালোবাসে না, কিন্তু সে তার মাকে ভালবাসে। সে গল্পের কথককে বলে (যার কাছে ওলগা সমস্যা নিয়ে এসেছে), সে তার মাকে পৃথিবীর অন্য সকলের চেয়ে বেশি ভালোবাসে। কথক ওলগাকে বলেন যে, রিয়াবকভ তার জীবনে একটি দরকারি টেবিলের মতোই গুরুত্বপূর্ণ (অর্থাৎ ওইটুকুই ভূমিকা পুরুষের নারীজীবনে), তাই ওলগা তাকে পুরোপুরি পেতে পারে। ঝেনিয়ার জীবনে যে কোনও পুরুষের প্রতি ভালবাসা, কমিউনিস্ট হিসাবে তার কাজের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ।

মাতৃত্বের প্রতি ঝেনিয়ার কোন আগ্রহ নেই, তার গর্ভপাত হয়েছে এবং কোলোন্তাই এই বিষয়ে কোন নিন্দাসূচক অবস্থান নেন না। কিন্তু কোনো গল্পেই, যৌন স্বাধীনতার এত উদযাপন সত্ত্বেও, কোলোন্তাই গর্ভনিরোধক সম্পর্কে একটিও কথা বলেন না। বরং তিনি জনসংখ্যা এবং শ্রমশক্তির সম্পর্কের কথা বলেন। ভাসিলিসার সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত এবং জেনিয়ার গর্ভপাত, উভয়ই ব্যক্তিগত পছন্দের উপর ভিত্তি করে। লেখিকা নারীদের গর্ভপাতের অধিকার দিয়েছেন। কিন্তু চেয়েছেন অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য নারী সন্তানধারণ করবে স্বেচ্ছায়, জনসংখ্যা বৃদ্ধির ডাকে সাড়া দেবে স্বেচ্ছায়।

১৯৩২ সাল নাগাদ ‘শ্রমিক মৌমাছির প্রেম’ ‘নিছক যৌনতায় আচ্ছন্ন’ বা ‘পেটি বুর্জোয়া আবর্জনা’ ইত্যাদি নামে অভিহিত হতে থাকে। তবু গল্পে ও নিবন্ধে, নারী ও নৈতিকতার প্রশ্নে বামপন্থী বলশেভিকদের অবদান হিসাবে কোলোন্তাতাইয়ের কাজগুলিই একা কূম্ভ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল ততদিন, যতদিন না পিতৃতান্ত্রিক নৈতিকতায় সমাজ আবার নিমজ্জিত হয়; বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, গর্ভপাত, শিশুর যত্ন এবং  পরিবারে গৃহশ্রমের ক্ষেত্রে প্রাথমিক বদলগুলোকে ফের বদলে ফেলা হয়।