আফ্রিকার লোককথায় সৃষ্টিতত্ত্ব : বুশোঙ্গো পুরাণ

আফ্রিকা মহাদেশের লোক কাহিনী সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে  ১৭০০ থেকে ১৮০০ শতকের মধ্যে।  সেই সময় বর্ণ বিদ্বেষের কারণে আফ্রিকার কালো মানুষদের পায়ে শিকল  পরিয়ে ক্রীতদাস হিসেবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যাওয়া হতো।  শ্বেতাঙ্গ মালিক সম্প্রদায় তাদের দাসদের ভাষা, সংস্কৃতি, আচার, বিশ্বাসের উপর চাবুক চালিয়ে  সেগুলি পরিত্যাগ করতে বাধ্য করতো। আর কালো মানুষদের  উপর চলতো  পাশবিক নির্যাতন।

আফ্রিকার ভিন্ন উপজাতিদের সৃষ্টির গল্পে মিশে আছে সাংকেতিকতার ছোঁয়া। আমাদের চারিপাশের জল, বাতাস, আকাশ, অগ্নি, পশু,পাখি, গাছপালার সবকিছুই অর্থবাহী। আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যভাগে  সুবিশাল কঙ্গো নদীর অববাহিকায় বাস বুশোঙ্গো ( Bushongo)  গোষ্ঠীর।  তাদের সৃষ্টি বিষয়ক লোককথাকে আগে তুলে ধরি।
 

কালের পর কাল মানুষ বিশ্ব ব্রহ্মান্ড সৃষ্টির রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করে চলেছে। স্বর্গ কীভাবে সৃষ্টি হয়েছে? বিশ্ব ব্রহ্মান্ড কি কি উপাদান দিয়ে তৈরি?  পৃথিবী কারা সৃষ্টি করেছেন ? আমরা কোথা থেকে এসেছি? আমাদের পূর্ব পুরুষ কারা? সৃষ্টিকর্তার পরিচয় কি? এসকল প্রশ্ন বার বার মানুষকে কৌতুহলী করেছে। সকল প্রশ্নের উত্তরের সমাধানে তৈরি হয়েছে পুরাণ কথা, লোককথা। মনোবিজ্ঞান বিশ্লেষণে যেমন একজন মানুষের পিতা মাতার পরিচয়, বংশ ইতিহাস,  আত্ম পরিচয় অনুসন্ধান করা হয় সংস্কৃতির ক্ষেত্রে ও এ কথা প্রযোজ্য। মনোবিজ্ঞানী এবং পৌরানিক কাহিনীবিদ্ মেরি লুইস ফন ফ্রাঞ্জ এর মতে " চেতনার দিকের একটি জাগরণ"  হলো সৃষ্টি বিষয়ক লোককথা। পুরাণ কাহিনী  লোককথা আবরণ মাত্র। এই সকল রূপক কাহিনীর আবডালে থাকে গভীর যুক্তি, বিজ্ঞান, চিন্তা চেতনা।  একটি দেশের বর্ণ, কর্ম, সংস্কৃতি  ধর্মীয় বিশ্বাস, সংগ্রামের শিকড় হলো লোককথা। তা সে  সৃষ্টি বিষয়ক লোককথাই হোক কিংবা কোন জাতির উদ্ভবের ইতিহাস। 

এবার ঘুরে দেখা যাক আফ্রিকা মহাদেশের দিকে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথায়,

"হায় ছায়াবৃতা,  কালো ঘোমটার নীচে

অপরিচিত ছিলো তোমার মানবরূপ

উপেক্ষার আবিল দৃষ্টিতে।

চিরকাল উপেক্ষা কুড়িয়েছে আফ্রিকা।

অন্ধকারাচ্ছন্ন, ভয়ংকর, বিপদসংকুল  এই মহাদেশ প্রাচীন সময় থেকে ঔপনিবেশিক অত্যাচারে জর্জরিত। কেবল বর্ণবৈষম্যের কারণে কালো মানুষরা পদদলিত হয়েছে শ্বেতাঙ্গদের কাছে।  বাইরের দেশ এই মহাদেশের উপর নিজেদের কর্তৃত্ব চালিয়ে পরাধীনতার শিকলে বেঁধে রেখেছে। আফ্রিকা  মহাদেশ সমৃদ্ধ লোককথার  উত্তরাধিকার। সুবিশাল আফ্রিকা  মহাদেশ লোককথার কাছে আজ ও মাথা নত করে আছে। দেহে শোনিত ধারা প্রবাহের মতো বংশ পরম্পরায় লোককথা  স্রোত প্রবাহিত।

আদিতে   পৃথিবী গাঢ়  অন্ধকার এবং জলে ডুবে ছিলো । অন্ধকার এবং জলের একমাত্র অধিপতি  ছিলেন   বুম্বা ( Bumba / Mbongo)।   দৈত্যাকার এবং শ্বেতকায়া বুম্বা একা  পৃথিবীতে বাস করতেন।  একাকীত্বের অবসাদ  তাকে ক্ষয় করায় তিনি  অসুস্থ হয়ে পড়লেন। একদিন  বুম্বার  পেটে ব্যথা অনুভূত হওয়ায় তিনি  বমন  করতে লাগলেন। তার প্রথম বমন এ সূর্যের  সৃষ্টি হলো।  সূর্যের প্রখর আলো জলে পতিত হলে  জলাশয়গুলো   শুকিয়ে যেতে শুরু করলো।  বাষ্পীভূত জল  আকাশে মেঘের সৃষ্টি  করলো।    ধীরে ধীরে গড়ে উঠলো  নানান ভূমিরূপ।  বুম্বার  দ্বিতীয় বমনে  সৃষ্টি হলো  চাঁদ এবং নক্ষত্র।  পৃথিবীতে  দিন এবং রাত্রির সূচনা হলো। বুম্বার  আরও বমনে  নয়টি প্রাণীর সৃষ্টি হলো।

চিতাবাঘ (কোয় বুম্বা), কুমির (গান্ডা বুম্বা),  কাছিম (কোনো বুম্বা) , ঈগল (পঙ্গো বুম্বা) মাছ ( ইয়ো বুম্বা), চিতা ( সিৎসি বুম্বা), সারস ( ইয়ানি বুম্বা), ছাগল (পুডি), এবং গুবরে পোকা । সারস  আরও বহু পাখির  জন্ম দিলো, গুবরে পোকা থেকে সৃষ্টি হলো  অসংখ্য কীটপতঙ্গ  , মৎস  আরও বহু জলীয় প্রাণীর  জন্ম দিয়ে  জলাশয় পূরণ করলো, ছাগল অন্যান্য শিং যুক্ত প্রাণীর সৃষ্টি করলো,  কুমির সাপ এবং অন্যান্য সরীসৃপ  সৃষ্টি করলো, সরীসৃপ এর মধ্যে  ইগুয়ানা আবার অসংখ্য   শিং বিহীন প্রাণী সৃষ্টি করলো। সকল প্রাণীর পর সবশেষে বুম্বা মানুষ গড়ায় মনোনিবেশ করলেন  । প্রথমে তিনি  সৃষ্টি করলেন তিনজন পুরুষ । তিন সংখ্যাটি সংখ্যাতত্ত্বে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।  হিন্দু ধর্মে তিন দেবতা ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশ্বর। তৃতীয় নয়ন জ্ঞানচক্ষুর প্রতীক,  নায়ানে ইঙ্গানা,  চংগান্ডা   এবং চিডি বুম্বা। নায়ানে  ইঙ্গানার বমনে  সাদা পিঁপড়ে সৃষ্টি হলে  পিঁপড়ের দল  কালো মাটি বহন করে  আনতে লাগলো। সৃষ্টি হলো  উর্বর ভূমিরূপের।   চংগান্ডা  ভূমিতে  প্রথম সবুজের প্লাবন  আনলেন । জন্ম নিলো   হরিত  ফসল , ফুল, ফল, গাছপালা,  ঝোপঝাড়। চিডি বুম্বা বহু প্রচেষ্টার পর কেবল একটি     চিল (পাখি) তৈরি করতে সক্ষম হলো। সব শেষে বুম্বা সৃষ্টি করলেন   বিদ্যুৎ এর  দেবী Tsetse কে।  ধরিত্রীর প্রাণী, উদ্ভিত এবং বৃক্ষাদির মাঝে একমাত্র নারী Tsetse (বিদ্যুৎ)   সকল সৃষ্টির মধ্যে  বিপর্যয়   তৈরি  করায়  বুম্বা তাকে আকাশে পাঠিয়ে দিলেন।  পরবর্তী সময়ে  মানুষদের বুম্বা আগুনের ব্যবহার শেখালেন । কথিত আছে, দেবী  Tsetse এখনও বজ্রপাত ঘটিয়ে মাঝে মাঝে  পৃথিবীতে আঘাত করেন। অবশেষে যখন সৃষ্টির কাজ শেষ হয় তখন , বুম্বা মানব জাতিকে  বলেন, ,

 "দেখুন এই সৃষ্টি এক  বিস্ময়। পৃথিবী এখন তোমাদের। "

সৃষ্টির এই কাহিনী Ex- nihilo creation লোককথা যার অর্থ হলো " Creation from nothing ". শূন্য থেকে সৃষ্টিকর্তা এই পৃথিবীকে তৈরি করেছেন। আদিতে কোনোকিছুর অস্তিত্ব ছিলো না। বিষয়টা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।  শূন্যের অর্থ সূচনা, সৃষ্টি।  এখন প্রশ্ন হলো, একা একজন  আধ্যাত্মিক সত্ত্বার   পক্ষে বিশাল সৃষ্টি সম্ভব কীভাবে?  সে উত্তর অধরা তবে যিনি পরম,  এক,অদ্বিতীয় তার পক্ষে হয়তো সব সম্ভব। মানব জগতে সকল নেতিবাচকতাকে মুছে নিজের চিন্তা,চেতনাকে জয় করার ক্ষমতা আছে মানুষের।  আমরাই  পারি আমাদের আভ্যন্তরীন পাশবিকতাকে হত্যা করতে আর  তিনি তো স্বয়ং পরম সত্তা।  এই লোককথাটি   "aetiology creation   myth", যার  অর্থ  রোগের কারণ। এই গল্পে Bushongo গোষ্ঠীর Supreme God বুম্বার শারীরিক সমস্যা থেকে সৃষ্টির সূচনা হয়েছে। দূর্ঘটনা বিশৃঙ্খলা, ভারসাম্যহীনতা  থেকে জগৎ সৃষ্টি হয়। বুম্বার অসুস্থতা, শারীরিক ভারসাম্যহীনতা নারীর অন্তঃসত্ত্বাকালীন  সন্তান প্রসবের পূর্ববর্তী সময়কে মনে করায়।  গল্প অনুসারে  প্রথমে প্রানীকূল তারপর মানুষের সৃষ্টি হয়।  অর্থাৎ বাস্তুতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়  পৃথিবীর বুকে। অন্যান্য লোককথায় সৃষ্টিকর্তা যেখানে সকল সৃষ্টির মূলে সেখানে এই গল্পে সকল প্রাণী পরমসত্তা সৃষ্ট নয়।   এক এক প্রজাতির প্রাণীর থেকে অপর প্রাণীর জন্ম হয়েছে। এইভাবেই   কোষ বিভাজনের ধারণাও কিছুটা  স্পষ্ট হয়ে যায়। সৃষ্টির এই অংশটি মনু সংহিতাকে  স্মরণ করায়। সৃষ্টিবর্ণনানুযায়ী, এই ব্রহ্মান্ড ঘোর অন্ধকারে ডুবে ছিলো। গাঢ় সে অন্ধকার অপ্রজ্ঞাত, অপ্রত্যক্ষ, অদৃশ্য।  অনন্তর সকল বস্তুর বীজভূত এক অন্ড প্রসূত হলে প্রবিষ্ট হলেন অচিন্তনীয়, অর্নিব্বর্চনীয় হিরণ্যগর্ভ।

হিরণ্যগর্ভঃ সমবর্ততাগ্রে (ঋকবেদ)

 আবার পুরাণানুসারে, ব্রহ্মার মানসজাত স্থানু, স্বায়ম্ভব, দক্ষ, মনু প্রমুখ । বুশোঙ্গোদের   গল্প পড়লে বোঝা যায়,  মনুষ্যজাতি কখনই   প্রাণীকূলের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে চায়নি। সকলেই স্বতন্ত্র।  তাই উভয়ের মধ্যে সংহতি রক্ষিত হয়েছে। এই লোককথায় সৃষ্টির শুরুতে এলো নয়জন প্রাণী তারপর তিনজন পুরুষ এবং  সব শেষে সৃষ্টি হলো একজন  নারী। পুরুষ অনুযায়ী নারী সৃষ্টি সংখ্যা ক্রমহ্রাসমান । গল্পে আপাতভাবে নারীকে ধ্বংসাত্মক মনে হলেও   পুরুষ এলো সৃষ্টির উৎস রূপে। সূচনায় অগাধ,অতল জলের প্রসঙ্গ এসেছে। 

 পৃথিবী সৃষ্টির কাহিনীতে জলধির অবস্থান নতুন কিছু নয়। জল জীবন, উর্বরতা, সজীবতার  প্রতীক। সভ্যতা গড়ে ওঠে নদীকে কেন্দ্র করে। শুধুই কি তাই? জল গতিময়,  প্রবহমান, পরিবর্তনশীল। বাইবেল, মায়া পুরাণ, মেসোপোটেমিয়া সভ্যতায় এমনকি বিভিন্ন  হিন্দু পুরাণেও বারংবার জল, সমুদ্র,  অন্ধকার ঘুরে ফিরে আসে। সৃষ্টির সাথে এগুলো ওতোপ্রোতো ভাবে জড়িত। সূর্য সৃষ্টি হওয়ার পৃথিবীতে অন্ধকার থেকে আলোর পথিক হলো।   সূর্য  শৌর্য, পৌরুষ, জীবন, শক্তি, ইতিবাচকতা, স্বচ্ছতা, আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। প্রাচীন মিশরীয় পুরাণে  সূর্য দেবতা "রা" ছিলেন উচ্চ দেবতাদের মধ্যে প্রভাবশালী। হিন্দু, সুমেরীয়, মায়া, ইনুইট, বাল্টিক, কেল্টিক প্রভৃতি বিভিন্ন পুরাণ এ দেখা যায় সূর্য দেবতা রূপে পূজিত হন। অন্যদিকে  চাঁদ নারীত্বের প্রতীক।  সর্বজনীনভাবে সময়ের ছন্দের প্রতিনিধিত্ব করে কারণ এটি চক্রকে মূর্ত করে। চাঁদের পর্যায়গুলি অমরত্ব এবং অনন্তকাল,

অভ্যন্তরীণ জ্ঞান, বা পৃথিবীতে মানুষের অবস্থার পর্যায়গুলি প্রতিফলিত করতে পারে,  কারণ  চাঁদ জোয়ার, বৃষ্টি, জল এবং ঋতু নিয়ন্ত্রণ করে। চন্দ্র  সূর্যের আলো এবং রাতের অন্ধকারের মধ্যবর্তী স্থল, এবং এইভাবে প্রায়শই সচেতন এবং অচেতনের মধ্যে রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করে। সূর্য এবং চাঁদের সৃষ্টি

দিন রাতের  বৈপরীত্য কে বোঝায়। সমগ্র পৃথিবী বৈপরীত্যর উপর দাঁড়িয়ে।  আলো, অন্ধকার, কালো- সাদা একে অপরের পরিপূরক।  একটি আছে বলেই অপরের অস্তিত্ব অনুভূত হয়। বুম্বা প্রথমে প্রাণীকুল সৃষ্টির আনন্দে মেতে ছিলেন। সৃষ্ট  প্রাণীকুল  মনোবল,বুদ্ধিমত্ত্বা, স্বাধীনতা বন্যতা ও সততাকে নির্দেশ করে। নয়টি প্রাণী সৃষ্টির পিছনে কি বিশেষ কারণ ছিলো? সংখ্যাতত্ত্বে নয় সংখ্যার বিশেষ গুরুত্ব আছে। এর দ্বারা সম্পূর্ণতা কে বোঝায়। শূন্য থেকে নয় এর মধ্যে সর্বশেষ সংখ্যা নয় এবং এর মানও সবচেয়ে বেশী। সমাপন এবং  সূচনা এর ভিতর নিহিত।  বুম্বা সৃষ্ট প্রতিটি প্রাণী নিজ নিজ তাৎপর্য বহন করে। গতি, কৌশল, শক্তি,সৌন্দর্য,  বুদ্ধি  এই সকল প্রাণীদের বৈশিষ্ট্য আর  এগুলো ছাড়া পৃথিবীর অগ্রগতি স্তিমিত হয়ে যায়। বুম্বা তিনটি পুরুষ তৈরি করলেন। এই সংখ্যা তিনটি কালকে নির্দেশ করে। অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ, জন্ম - জীবন- মৃত্যু,  সূচনা- মধ্য পর্যায় এবং মৃত্যু সকলই তিন সংখ্যার সাথে যুক্ত। তৃতীয় নয়ন হলো  জ্ঞানচক্ষু,  ঐশ্বরিকতার সাথে সম্পর্কিত।  বুম্বা  একজন নারীই  সৃষ্টি করেছিলেন । আমাদের পরম ঈশ্বর এক, বিশ্ব ব্রহ্মান্ডও একটিই। 

কাহিনীতে এসেছে  বিবর্তনের কথা। সূর্য, চন্দ্র, প্রাণীকুল, পুরুষ,  উর্বর ভূমি, গাছপালা, চিল এবং বিদ্যুৎ। আমাদের মনে বারবার প্রশ্ন জাগে, কেন বুম্বা সকল কিছু সৃষ্টি করে মানব জাতিকে দিয়ে দিলেন? নিজ সৃষ্টির উপর তার কি কোনো নিয়ন্ত্রন ছিলো? নাকি আভ্যন্তরীন কোনো শক্তি এর জন্য দায়ী?

জগৎ সৃষ্টি - স্থিতি- লয় এই তিনের উপর দন্ডায়মান। তিনটির ভারসাম্যে ব্যাঘাত ঘটলে পৃথিবীর বিনাশ অবশ্যম্ভাবী। শূন্য থেকে জাগতিক সকল কিছুর সূচনা। অপরদিকে ধ্বংসের ভিতর লুকিয়ে আছে সৃষ্টির বীজ। বিনাশেই সমাপন নয়। বজ্রপাতকে 

আপাতদৃষ্টিতে ভয়ঙ্কর মনে হলেও এটি  পৃথিবীর বৈদ্যুতিক ভারসাম্য রক্ষা করে, মাটিকে উর্বর করে  প্রকৃতিকে শীতলতা দেয় এবং বাতাসকে বিশুদ্ধ করে।  কারণ বিদ্যুৎ বৃষ্টির  সম্ভাবনা সূচিত করে

 বজ্রপাত সহ বৃষ্টিপাতের পর মেঘমুক্ত আকাশে রামধনু দেখতে পাওয়া যায়। বহুমাত্রিক এই কাহিনী সৃষ্টির গভীরতা কে প্রকাশ করে। নারী- পুরুষ - প্রাণীকুল সকল পরম সত্তা সৃষ্টি করে পৃথিবীকে সম্পূর্ণ করলেন।