সংঘাত কোন দিকে মোড় নিতে পারে ?

সম্ভবত আর দু এক সপ্তাহের মধ্যেই বালোচ আর পাখতুনিস্তান "স্বাধীন" হতে চলেছে। ভারতের প্রতিরক্ষা এবং বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা তালিবান প্রতিনিধিদের সঙ্গে শলা করতে বিদেশ পাড়ি  দিচ্ছেন।  ভারত যুদ্ধ করবে না।  মার্কিন অস্ত্রে সজ্জিত তালিবানি সৈন্যদের  দিয়ে পাকিস্তানের ওই অংশ তালিবান দখল করবে। পরিকল্পনা টা  ট্রাম্প সাহেবের।  বালোচ কে এই অবস্থায় ধরে রাখতে পাকিস্তানের প্রভূত আর্থিক প্যারাসনি হয়, পাখতুনিস্তানের ক্ষেত্রে ও তাই. ওই প্রখণ্ডগুলোতে কোনো বড়ো  খাদ্যপণ্য উৎপন্ন হয় না , ইন্ডাস্ট্রি বলে তো কিচ্ছু নেই, কিন্তু মানুষ আছে মেলা , তাদের খাদ্য পাঠাতে হয় , পাকিস্তানের উর্বর ভূমি থেকে , অনেক কম দামে।  বালোচি আর পাখতুনরা নিষিদ্ধ মাদকের উৎপাদনে ভালোই লাভ করে।   খাদ্য ও পণ্য কেনে ইরান থেকে , সে দেশটিও  যথেষ্ট উর্বর। তারা সহজেই খাদ্যপণ্য এই দুটি নবজন্ম পাওয়া দেশে খাদ্যশস্য রফতানি করতে পারবে , মারিজুয়ানা বেচতে হবে না।  তালিবান ফুলে ফেঁপে উঠবে। পাকিস্তান ঘাড়  থেকে বোঝা নামাতে পারবে।  পাকিস্তান অতি সহজেই পাঞ্জাব আর সিন্ধ  নিয়ে খুব ভালো থাকবে।  আর বিস্তর লাভবান হবে ট্রাম্পের মার্কিন , কারণ বালুচিস্তান আর পাখতুনিস্তান খনিজ সম্পদ আর মাটির তোলার জ্বালানিতে খুবই সমৃদ্ধ।  ইরান এর ওপর দিয়ে পাইপ লাইন যাবে তাই ট্রাম্পের মার্কিন এখন ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক আলোচনায় বসতে চাইছে।  সবই যেন সবার জয়ের পরিকল্পনা , ইঞ্জিরিতে যাকে  বলে Win-Win syndrome . মোদী সাহেব তার নিজের দেশে ভোট ভাসানোর একটা সুযোগ পাবে।  এটাই ট্রাম্পের পরিকল্পনা।  পুরো অঞ্চলটিতে ট্রাম্প তার নয়া সাম্রাজ্যবাদী বানিয়াবৃত্তি চালিয়ে এক স্বপ্নের অঞ্চল বানাবে।  এই পরিকল্পনা একেবারে তাকে "রিভিয়েরা অর্থনীতি " চালাতে সাহায্য করবে , তার ব্যক্তিগত ব্যবসা নগরায়ন আর আবাসন উদ্যোগ। তৈরী হবে এক "নতুন মধ্য প্ৰাচ্য" যার  পুরোটাই চীনকে বুড়ো আন্দুল দেখিয়ে একেবারে প্রায় সমুদ্র থেকে ইউরোপ আর পাহাড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়বে ।  নব বানিয়াবাদী সাম্রাজ্যবাদ নিজের গভীর সংকট থেকে মুক্তি পেতে চায় এই অঞ্চলকে আর্থিক করায়ত্ত করার মাধ্যমে।  এটাই ন্যূনতম যুদ্ধ করে বা না করে, নব্য মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী প্রকল্প।  চীন, রুশ  খুব একটা তুষ্ট না হলেও তাদের এই মুহূর্তে কিছুই করার থাকবে না। " আজাদ কাশ্মীর" আর আকসাই চীন একটা সড়কপথ হাসিল করলেও কোনো বন্দর কে দখলে না আনতে  পারলে , কোনো লাভ নেই।  সেই ক্ষেত্রে কম আর্থিক ক্ষমতা সম্পন্ন পাকিস্তানকে চীন এগিয়ে এসে সাহায্য করবে যাতে করাচি বন্দরের অধিকার পাওয়া যায়। আর ঠিক সেই জন্যেই আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডার তড়িঘড়ি পাকিস্তান কে ২ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে , খুব একটা না চাইতেই।  করাচি বন্দর থেকে ভারত কিসুই পাবে না।  বালুচিস্তান আর পাখতুনিস্তানের "স্বাধীনতা" মোদী সরকার কে আদৌ কোনো আর্থিক স্বার্থসমৃদ্ধ করবে না , দেবে এক আত্মম্ভরিতার ভাওতাবাজির দেমাগ। আর্থিক দিক থেকে ভারতের  ভাঁড়ারে কিসুই জুটবে না।  তাতে কি? মোদী শাসন তো একটা দীর্ঘদিনের পাকাপাকি সুবিধা পাবে !  শেষ বিচারে [যা হয়তো খুব একটা দেরিতে নয়, হয়তো বছর পাঁচেকের মধ্যেই , তবে তার পর ট্রাম্প, বা মোদী থাকবে না , নোবেল পুরস্কার হাসিল করে রিভিয়েরা তে মৌচ মস্তি   করবে আর দুনিয়া জুড়ে বানিয়ামুখি শান্তির দূত হয়ে বক্তিমে ঝেড়ে বেড়াবে ] বিশ্বে এক দিকে মার্কিন ব্লক আর উল্টো দিকে চীন, রুশ ব্লক এর  দ্বৈরথ  চলবে।  . এই মুহূর্তে অস্ত্রাদি বা যন্ত্রাদি উৎপাদনে এবং প্রযুক্তিতে চীন অনেক এগিয়ে আর তার প্রবৃদ্ধির হার অনেক ত্বরণ গতিসম্পন্ন।  মার্কিন ব্লকের  নজর রাজনীতিতে আর চালাকি চতুরতায়।  ট্রাম্পের পরিচালনায় ফ্যাসিবাদ এক বিশ্বজনীন রূপ নিতে চলেছে একধরণের ক্রোনি ফ্যাসিস্ট বা international crony fascist oligarchy গড়ে উঠতে চলেছে , যা চলবে cryptocurrency  নির্ভরতায়।  সমস্ত ধরণের প্রযুক্তি এখন সেই "সমন্বিত আর্থিক শাসনব্যবস্থার " দিকে ঘনীভূত হতে চলেছে। সাম্রাজ্যবাদ বা বিশ্ব পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যবাদ এখন দ্রুত সেই ফ্যাসিবাদের দিকেই এগোচ্ছে, আপাতত এই নতিজা  খুবই অনুধাবনযোগ্য

একটা নয়া মোড়  আসন্ন।  নয়া যুগ।  "উত্তরাধুনিক" সাম্রাজ্যবাদ যুদ্ধের রূপ কে বদলে দেবে , ঘরে বসেই পরিমিত আকারে পরিমিত শক্তিতে অনেক বেশি ধ্বংসাত্মক আকারে এক আর্থিক -- সামাজিক -- সাংস্কৃতিক সম্মিলনের রাজনৈতিক পরিকল্পনার যুদ্ধই এখন এক চলমান বিশ্বযুদ্ধ চলবে দীর্ঘকালীন, এটাই হবে পুঁজির কেন্দ্রিকরণের আর পুঁজি গঠনের আগামী প্রকরণ।