অঙ্কের জগৎ ও অধ্যাপকের প্রেম : চেনা পৃথিবীর অচেনা আখ্যান

একটা দিন শেষ হয়ে আসছিল। সারা দিনের দহন গায়ে মেখে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছিল গাছগুলো। এমন ঘন নৈঃশব্দ্যের মাঝখানে মাথার মধ্যে ভেসে উঠছিল একটি সংখ্যা ২৮...সাধারণ একটি মেয়ের একাকীত্ব, তার লড়াই হঠাৎই থমকে দাঁড়িয়ে কুর্নিশ জানিয়েছিল তাকে। চেনা জগতের মধ্যে অচেনা সৌন্দর্য খুঁজে পাওয়ার এক আশ্চর্য মুহূর্তে অনন্য হয়ে উঠেছিল সেই গৃহপরিচারিকা। আর অঙ্কের জগতকে চিরকাল এড়িয়ে চলা এক পাঠক ভাবতে বসেছিল তার প্রতিদিনের জীবনের প্রয়োজনীয় অঙ্কগুলোর কথা। সেইসব বিশেষ সংখ্যা, তারিখ, দিন, মাস , বছরের মাঝে হঠাৎই হারিয়ে যাওয়া সময়ের কথা...যেখানে সময়ের আয়ু প্রতিদিন আশি মিনিট। 

The room was filled with a kind of stillness. Not simply an absence of noise, but an accumulation of layers of silence...

 ১৯৭৫ সালে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় গণিতের অধ্যাপক স্মৃতি হারিয়ে ফেলেন। তাঁর জীবন থমকে আছে অতীতে। ১৯৯২ সালে তাঁকে দেখাশোনা করতে আসেন এক গৃহপরিচারিকা। তখন অধ্যাপকের সম্বল প্রতিদিনের আশি মিনিটের স্মৃতি এবং অঙ্কের এক বিপুল জগৎ।

সংখ্যাগুলোই তাঁর না বলতে পারা কথা, অপরের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম এবং এক অর্থে বর্মও। প্রতিদিনের গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো ছোট ছোট চিরকুটে লিখে তিনি আটকে রাখতেন গায়ের পোশাকে। সেই চিরকুটের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল << ৮০ মিনিটের বেশি আমার মনে থাকে না।

প্রতি সকালে ঘুম ভেঙে এই দুঃসহ অবস্থাটার সঙ্গে তিনি মানিয়ে নিতেন। পাঠকও মানিয়ে নেয় আর গৃহপরিচারিকা ও তার দশ বছরের ছেলের সঙ্গে ঢুকে পড়ে অঙ্কের জগতে। সেই জগতের অপূর্ব কাব্যময়তার ঘোর স্মৃতিহীনতার কষ্টকে কখন যেন ভুলিয়ে দেয়। সমাধানহীন অসংখ্য প্রশ্ন আর তার উত্তরের খোঁজ এই ধুলোমাটির পৃথিবীকে ছাপিয়ে কোনো এক অসীম অনন্তের স্বপ্ন জাগিয়ে তোলে... সারাদিনের পরিশ্রমের পর তাই একজন বাড়ি ফিরে সুহৃদ সংখ্যার খোঁজ করে। অঙ্কের একটি সূত্র বুঝতে লাইব্রেরিতে যায়। এ যেন জীবন ও তার অনন্ত জিজ্ঞাসা... অনুসন্ধান...

১০০র স্কোয়্যার রুট হল ১০, ১৬র স্কোয়্যার রুট হল ৪, ১ এর স্কোয়্যার রুট ১ তাহলে মাইনাস ১ এর রুট...?

প্রফেসর কখনো তাড়া দিতেন না। আমি আর আমার ছেলে একমনে ভেবে চলেছি, এই অবস্থায় আমাদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতেই উনি পছন্দ করতেন বেশি।

" এরকম কোনো সংখ্যা সম্ভবত নেই। "

অনেক ভেবেচিন্তে আমি শেষপর্যন্ত মুখ খুললাম।

"উহুঁ, আছে, এই এখানে।"

উনি নিজের বুকের দিকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বললেন।

"খুবই আত্মমগ্ন, নিভৃতচারি সংখ্যা তো, চোখে পড়ে যায় এমন কোথাও দেখা দেন না, কিন্তু একেবারে আমাদের মনের মধ্যে রয়েছেন, ছোট ছোট দুটো হাতে জগতের ভার সামলাচ্ছেন।"

আমরা আবার চুপ করে, অজানা কোন দূরদেশে যেন প্রাণপণে দু'হাত প্রসারিত করে রাখা মাইনাস ১-র স্কোয়্যার রুটের পরিস্থিতিটা ভাবার চেষ্টা করতে থাকলাম। বৃষ্টি পড়ার শব্দটুকুই কেবল কানে আসছিল।যেন রুটের চেহারাটা আরেকবার যাচাই করে নেওয়ার চেষ্টায়, আমার ছেলে নিজের মাথায় হাত বোলাতে থাকল।

উপন্যাসে কোনো চরিত্রের নাম নেই। অধ্যাপক গৃহপরিচারিকার ছেলের নাম দিয়েছিলেন রুট। শিশুদের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ছিল সীমাহীন। এক প্রবীণ গণিতজ্ঞ অনায়াসেই হয়ে উঠেছিলেন এক প্রাইমারি স্কুল ছাত্রের বন্ধু।

তিনজন অসমবয়সী মানুষ যখন ডুবে থাকত গাণিতিক কোনো সমস্যা সমাধানের চেষ্টায় মনে হত এই অনন্ত খোঁজই পৃথিবীর একমাত্র সত্য। আর শাশ্বত সত্য চোখে দেখার জিনিস নয়। কোনো পার্থিব বস্তুই হোক কিংবা প্রাকৃতিক ঘটনা কোথাও পাওয়া যাবে না তাকে। এমনকি মানুষের আবেগের মধ্যেও কোনো অস্তিত্ব নেই তার। উপন্যাসের ১১টি পরিচ্ছেদের সংহত বিন্যাস, ভাব ও ভাষার সংযত প্রয়োগে কখনই ঘটনা ও চরিত্রগুলি অতিনাটকীয় হয়ে উঠেনি বলেই গল্পটি মায়া, মমতা, স্নেহ, দায়বদ্ধতার ঠাস বুননে এক নিটোল জীবন হয়ে উঠেছে। গৃহপরিচারিকা এখানে গল্পের কথক আর তার প্রতিটি কাজে সে পাঠককে টেনে নিয়ে যায়...

'এখন উনি যা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন, সেই গণিতের জটিলতার তুলনায় মাংস গ্রিল করা তেমন কোনো সমস্যাই নয় বলে মনে হয়, কিন্তু উনি যেন একটা অভিনব আবিষ্কার করে ফেলেছেন, এমনভাবে সামনে মাথা ঝোঁকালেন। আমাদের মাঝখানে একটা সুগন্ধ বাতাসে ভেসে উঠল।

এসবের সঙ্গেই ক্যাপসিকাম আর পেঁয়াজ স্লাইস করে কেটে স্যালাড করলাম, অলিভ অয়েল দিয়ে ড্রেসিং করে, ডিমটা ভাজলাম। কুচিকুচি করে কাটা গাজরও অলক্ষ্যে ড্রেসিং এর ভেতর মিশিয়ে দেব বলে ভেবেছিলাম বটে, কিন্তু নজরদারি চলছে বলে আর সেটা পারলাম না। ওঁর মুখ দিয়ে কথা সরছিল না। লেবুটাকে যে কেটে ফুলের আকার দিচ্ছিলাম, তাতেই আর শ্বাস ফেলছিলেন না, ভিনিগার আর তেল মেখে দিতেই রঙটা যখন পালটে দুধের মতো সাদা হয়ে গেল, শরীরটাকে আরো ঝুঁকিয়ে ফেললেন,ভাপ উঠতে থাকা ওমলেটটা যখন কাউন্টারের ওপর সাজিয়ে দিলাম,একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস বেরিয়ে এল।

"বলছি যে...," আমি জিজ্ঞেসই করে বসলাম।" এত আগ্রহ নিয়ে কী দেখছিলেন? রান্না করছিলাম তো। "

"তোমাকে রান্না করতে দেখতে আমার ভালো লাগে।"

এক স্মৃতি হারানো বৃদ্ধের সহায় হতে আসা ভাগ্যবিড়ম্বিত মেয়েটি আশ্রয় খুঁজে পায় বিরাট আকাশের নিচে। অগনিত সংখ্যা যেখানে নিয়ত ভেসে বেড়ায় আনন্দ ভেলায়।রুটের অনুপস্থিতির দিনগুলোতে তার আশঙ্কা উদ্বেগ নিমেষে দূর করে দেন অধ্যাপক তাকে অঙ্কের জগতে টেনে এনে। দূরে থাকা সন্তানের জন্য মায়ের বুকের শূন্যতার মাঝে এসে দাঁড়ায় গণিতের শূন্য। শূন্যও হয়ে ওঠে নির্ভরতার অস্তিত্ব। কোনো কিছুকে প্রকট করে না তুলে নীরবেই যেমন গড়ে ওঠে পারস্পরিক এক নির্ভরতার, বন্ধুত্বের বৃত্ত তেমনভাবেই লেখক মৃদু চালে বলতে থাকেন তাঁর গল্প।

প্রতিদিনই প্রথম থেকে শুরু হয় সেই গল্প। অধ্যাপকের মতো। প্রতিদিনই নতুন জীবন, নতুন অভিজ্ঞতা, নতুন বিস্ময়, নতুন আবিষ্কার। জীবন সেখানে ক্লান্ত নয়, জীর্ণ নয় বরং নতুন প্রাণের আনন্দে মুখরিত। রুটের সঙ্গে বন্ধুত্বের আরেকটি সূত্র বেসবল। তারা মেতে থাকে চলমান জীবন নিয়ে।যা নেই, যা হারিয়ে গেছে তার জন্য শোক নেই, ব্যথা নেই, নেই কোনো অনুযোগ জগৎ ও জীবনের কাছে। বরং অপেক্ষা আছে আকাশের প্রথম তারাটি ফুটে ওঠার। অধ্যাপক সবার আগে দেখতে পেতেন...

'ওই যে, প্রথম তারাটা", উনি ওই বার্ধক্যজীর্ণ আঙুল দিয়ে বিশাল আকাশের একটা বিন্দুর দিকে নির্দেশ করতেন। অন্য কেউ ওটাকে আলাদা করে চিহ্নিত করতে পারবে না, আর ওই বিন্দুটাতেই তা সার্থক হয়ে উঠত। 

অপেক্ষায় থাকতেন প্রিয় খেলোয়াড় এনাৎসু য়ুতাকারকে তার ২৮ নম্বর জার্সিতে দেখতে পাওয়ার। সেটা যে আর কখনও হবে না তা বলা যায়নি তাকে।মাঝের হারিয়ে যাওয়া সময়ের সঙ্গে নিয়ত পরিবর্তনশীল জীবনও যে হারিয়ে যায় তা না বলে বরং তার ছবির কার্ড উপহার দিল মা আর ছেলে।সেই কার্ড আমৃত্যু নিজের বুকে ঝুলিয়ে রাখলেন অধ্যাপক...তাঁর স্মৃতিতে রয়ে গেল আলোর মধ্যে ভেসে থাকা এনাৎসু। আমাদের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য জগতের আড়ালের সেই জগতে ' সারা জীবনে ছোঁড়া সবচেয়ে দ্রুত বলটি ছুঁড়ছে এই এনাৎসু।লম্বা ডোরা ডোরা জার্সির কাঁধের ওপরে শোভা পাচ্ছে জার্সির নম্বর ।

পার্ফেক্ট নাম্বার ২৮।

ইয়োকো ওগাওয়ার অন্যতম উল্লেখযোগ্য উপন্যাস হাকাসে- নো - আইশিতা-সুইশিকি (The Housekeeper and the Professor ) প্রকাশিত হয় ২০০৩ সালের আগস্ট মাসে। ২০০৯ সালে অনূদিত হয় ইংরেজিতে। মূল জাপানি থেকে বাংলায় 'অঙ্কের জগৎ ও অধ্যাপকের প্রেম' নামে অনুবাদ করেছেন বিশিষ্ট অনুবাদক অভিজিৎ মুখার্জি। সাবলীল অনুবাদে অসামান্য উপন্যাসটিকে বাঙালি পাঠকের কাছে পৌঁছে দিয়ে লেখক ইয়োকা ওগাওয়ার প্রতি পাঠকের মনোযোগ আকৃষ্ট করেছেন তিনি। ইয়োকা ওগাওয়ার জন্ম ১৯৬২ সালে জাপানে। ২০২০ সালে তাঁর মেমোরি পোলিস আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কারের জন্য শর্টলিস্টেড হয়েছিল। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা পুরস্কার প্রাপক এই লেখক তাঁর লেখার অনুপ্রেরণা হিসেবে উল্লেখ করেছেন অ্যান ফ্রাঙ্কের ডায়েরির নাম, - "Her diary proved that people can grow even in such a confined situation. And writing could give people freedom "

জাপানে তাঁর সমসাময়িক আর পাঁচজন মেয়ের মতো বিয়ের পর চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। ছাড়েননি লেখালেখি। তিনি ইচ্ছে করে গোপন না করলেও তাঁর লেখার কথা জানতেন না কেউ। তাঁর "The Breaking of the Butterfly" উপন্যাস সাহিত্য পুরস্কার পাওয়ার পর তাঁর স্বামী জানতে পারেন তাঁর সাহিত্য চর্চার কথা। ঠিক এমনই নীরবে , নিঃশব্দে বিপ্লব ঘটিয়ে চলেন তিনি এক একটি উপন্যাসে। এতটুকু উচ্চকিত না হয়েও জীবনের নানা সংকট, সংশয় ,যন্ত্রণার গভীর বিষয়কে পাঠকের সামনে তুলে ধরে উন্মুক্ত করে দেন ভাবনার এক বিরাট জগৎ। সেই সম্ভাবনার জগতে নব জন্ম হয় পাঠকের...

"দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় কোনো কাজে আসে না বলেই, গণিতের প্রথাকরণ এমন সুষমাময়।" , প্রফেসর যে এই কথাগুলো বলতেন, মনে পড়ে গেল।

"মৌলিক সংখ্যার প্রকৃতি খোলসা হয়ে যাওয়ার পরেও, জীবনধারণে বিশেষ কোনো সুবিধে ঘটে না, পয়সাকড়ির দিক থেকেও লাভবান বিশেষ হওয়া যায় না। গণিতের আবিষ্কার যতই জগৎ থেকে মুখ ফেরানো, উদাসীন হোক না কেন, ফলের দিক থেকে বাস্তবে তার প্রয়োগ হয়েছে, এমন বহুক্ষেত্রেই ঘটেছে। উপবৃত্ত সংক্রান্ত গবেষণা গ্রহদের কক্ষপথের হদিস দিয়েছে। নন ইউক্লিডিয়ান জ্যামিতি, আইনস্টাইনের মাধ্যমে মহাজগতের রূপটি কেমন তার হদিস দিয়েছে।এমনকি মৌলিক সংখ্যা পর্যন্ত, গোপন কোড তৈরির ভিত্তি হিসেবে কাজ করে, যুদ্ধের সহায়তা করতে নিজের ভূমিকা পালন করে চলেছে। কিন্তু সেসব গণিতের উদ্দেশ্য নয়। তার উদ্দেশ্য কেবল সত্যকে উদঘাটন করা।"

"আচ্ছা, এখানে একটা সরলরেখা টেনে দেখাও দিকি, "... আমাকে বলেছিলেন।

"হ্যাঁ , এরকম। এটাই সরলরেখা।... কিন্তু ভেবে দেখ, তোমার আঁকা সরলরেখার একটা শুরু আর একটা শেষ আছে। তার মানে, দুটো বিন্দুকে তাদের মধ্যেকার সংক্ষিপ্ততম দূরত্বের দ্বারা সংযুক্ত করা একটি রেখাংশ। প্রকৃত সরলরেখার কোনো প্রান্ত নেই। সীমাহীনভাবে, অনন্ত পর্যন্ত প্রসারিত হয়ে চলতে হয়। কিন্তু একখন্ড কাগজ তো আর অসীম নয়, তোমার শারীরিক ক্ষমতারও সীমা আছে, তাই আপাতত এই রেখাংশটুকু দিয়েই আসল জিনিসের কাজ চালিয়ে নিচ্ছি বৈ কিছু নয়। তারপর দেখ, যতই ধারালো ছুরি দিয়ে যত্ন করে চাঁছো না কেন, পেনসিলের শিসটা একটু হলেও মোটা তো হবেই। ফলত এখানে সরলরেখাটার প্রস্থ থাকবে। 'এরিয়া' বলে কিছু থাকবে, তার ক্ষেত্রফল থাকবে। অগত্যা, সত্যিকারের কাগজে প্রকৃত সরলরেখা আঁকা সম্ভবই নয়।''

আমি খুবই নিবিষ্টভাবে পেনসিলের ডগাটাকে তাকিয়ে দেখলাম।

" সত্যিকারের সরলরেখা তাহলে কোথায় পাওয়া যাবে? ওটি আছে একমাত্র এখানে।" প্রফেসর নিজের বুকে হাত রাখলেন...

পৃথিবীর এই দৃশ্যমান ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য জগৎটাকে ধারণ করে রয়েছে যে অদৃশ্য জগৎ , যার নাগাল পায়না মানুষ কোনোদিন তারই অস্তিত্বের অনুভব শত অন্ধকারের মধ্যেও আলো দেয়...

প্রস্থও নেই, ক্ষেত্রফলও হয় না, অনন্ত অবধি বিস্তারিত হয়ে চলেছে একটা সত্যিকারের সরলরেখা, রাজকীয়ভাবে সমস্ত অন্ধকারকে বিদ্ধ করতে করতে।এই সরলরেখাটাই, আমাকে সামান্য একটু শান্তি দেয়, শান্ত রাখে...' মুক্তি দেয় অযুত সম্ভবনার নক্ষত্রখচিত আকাশে...