আনা দস্তয়েভস্কি : একটি স্বল্পালোচিত অধ্যায়

“This is my last message to you: in sorrow, seek happiness.”
                    ― The Brothers Karamazov

৪ঠা অক্টোবর, ১৮৬৬। আনা গ্রিগরিয়েভনা স্নিৎকিনা নাম্নী বিশ বছরের তরুণীটি স্টোলিয়ার্নি লেনে অবস্থিত আলনকিন হাউসের ১৩ নং ফ্ল্যাটে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্তভাবে বেল বাজালেন যখন, ঘড়িতে তখন ঠিক সকাল ১১.২৮। মস্ত বড় বাড়িটার বিভিন্ন ফ্ল্যাটে নানাধরণের পেশার মানুষের বাস। ঘরের পরিচারিকা দরজা খুলে তাকে বসতে বলে ভিতরে চলে গেল, কম্পিত বক্ষে খাওয়ার ঘরে বসে রইলেন আনা, কারণ যে মানুষটির সাথে দেখা করতে এসেছেন, তিনি আর কেউ নন - রাশিয়ার প্রখ্যাত লেখক দস্তয়েভস্কি।  

আসুন পাঠক, আনা যে সময়টুকু বসে থাকবেন লেখকের অপেক্ষায়, তার মধ্যে আমরা জেনে নিতে পারি আনার সম্পর্কে দু’চার কথা। আনার বাবা গ্রিগরি স্নিৎকিন ছিলেন সরকারি দপ্তরের কর্মচারী। দুই মেয়ে, এক ছেলে, স্ত্রী’কে নিয়ে সংসার ছিল পিটার্সবার্গের শহরতলিতে। বইয়ের নেশা ছিল গ্রিগরি স্নিৎকিনের, যা সংক্রমিত হয় আনার মধ্যেও, দস্তয়েভস্কির লেখার সাথেও এভাবেই একদিন পরিচয় হয় আনার। ২৮শে এপ্রিল, ১৮৬৬ গ্রিগরির মৃত্যু হলে বাড়িভাড়ার টাকায় কোনো মতে সংসার চলতো স্নিৎকিন পরিবারের। এর মধ্যে আনা ভর্তি হয়েছিলেন স্টেনোগ্রাফির স্কুলে যেখানে অল্প সময়ের মধ্যেই সেরা ছাত্রী হয়ে উঠেছিলেন তিনি। এখান থেকে আবার আমরা ফিরে যেতে পারি আবার সেই পড়ার ঘরে যেখানে আনা দস্তয়েভস্কির জন্য অপেক্ষারত।

একটু পরেই বছর পঁয়তাল্লিশের মানুষটি এলেন, তাকে পড়ার ঘরে বসতে বলেই আবার চলে গেলেন।ফিরে এলেন কিছুটা ধাতস্থ হয়ে। ‘চারিচক্ষু’তে মিলন হল বটে, তবে তা খুব একটা সুবিধের নয়। আনা লক্ষ্য করেছিলেন মানুষটির বাঁ চোখটির রং বাদামী ও স্বাভাবিক হলেও ডান চোখের মণিটি কালো ও এতটাই বড় যে চোখের সাদা অংশটি প্রায় ঢাকাই পড়ে গেছে। মৃগি রোগে আক্রান্ত হতেন দস্তয়েভস্কি, মৃগিরোগের ফিট হওয়ার সময় ডান চোখে আঘাত লেগেছিল তাঁর, ডাক্তার অ্যাট্রোপিন দেওয়ায় চোখের মণি বড় হয়ে যায় তাঁর। 

-        ‘Why do you only speak about your misfortunes?’ She asked him. ‘Why never mention the times you have been happy?’

-        ‘But I have never experienced happiness,’ he replied, ‘I have always been waiting for it.’

কিন্তু আনা কেন এসেছিলেন দস্তয়েভস্কির বাড়িতে? Helen Muchnicএর লেখা থেকে জানতে পারি, বন্ধু A.P.Milyukov একদিন গিয়েছেন দস্তয়েভস্কির বাড়িতে, দিনটা ১৮৬৬র ১লা অক্টোবর, দেখেন বিমর্ষ লেখক ঘরের মধ্যেই চলাফেরা করছেন যন্ত্রণাক্লিষ্ট মুখে। কারণ জিজ্ঞাসা করায় লেখক বলেন, যে সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যেতে বসেছে সে কি বিমর্ষ না হয়ে পারে?এই বলে তিনি বন্ধুর হাতে তুলে দেন একটি চুক্তিপত্র যে চুক্তি তিনি প্রকাশক Stellovsky এর সাথে করেছিলেন। Milyukov সেটি পড়ে দেখেন যে মাত্র তিন হাজার রুবলের বিনিময়ে তিনি তাঁর সমস্ত লেখার স্বত্ত্ব প্রকাশককে দিয়ে দিয়েছেন, শুধু তাই নয়, ১লা নভেম্বরের মধ্যে একটি নতুন উপন্যাসও প্রকাশকের হাতে তুলে দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছেন, অন্যথায় পরবর্তী নয় বছর তিনি যা প্রকাশ করবেন তা সবই বাজেয়াপ্ত হবে প্রকাশকের ক্ষতিপূরণ হিসেবে। এ কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে চরম আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হয়ে বাধ্য হয়েই তিনি এই পথ বেছে নিয়েছিলেন। এই অবস্থাতেও তিনি তাঁর প্রথম স্ত্রীর পূর্বতন বিবাহজাত সন্তানের ভরণপোষণের জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছিলেন, মৃত ভাইয়ের দুস্থ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ইতিপূর্বে তিনি ও তাঁর ভাই যৌথভাবে তাঁর লেখা ডায়েরি প্রকাশ করে প্রায় দেউলিয়া হয়ে যান ও বিশাল ঋণের জালে জর্জরিত হয়ে পড়েন।প্রকাশক Stellovskyর দেওয়া অর্থের একাংশেই সে ঋণ শোধ হয়, বাকি অর্থ তিনি জুয়া খেলে উড়িয়ে দেন। Milyukov যখন জানতে চান নতুন উপন্যাসের কতটা লেখা হয়েছে তাঁর, দস্তয়েভস্কি উত্তর দেন, এক লাইনও না। তখন Crime and Punishment ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে, তাতেই বুঁদ হয়ে আছেন লেখক! Stellovskyর উপন্যাসের প্লট যদিও তাঁর মাথায় আছে, তাকে বাস্তবে রূপ দিতে এখনই অপারগ তিনি। সব শুনে Milyukov প্রস্তাব দেন যদি বন্ধুরা মিলে এক একটি অধ্যায় লিখে শেষ করে ফেলা যায় উপন্যাসটি তবে কেমন হয়? দস্তয়েভস্কি তাচ্ছিল্যভরে নস্যাৎ করে দেন সে প্রস্তাব, অন্যের লেখায় আমি নিজের নাম কখনই চাপাবো না! অগত্যা Milyukov দ্বিতীয় প্রস্তাব যা দেন তা হল একটি স্টেনোগ্রাফার নিয়োগ করা গেলে লেখকের কথা শুনে সে লিখে নিতে পারে সবকিছু। সদ্য সেন্টপিটার্সবার্গেই শুরু হয়েছে একটি স্টেনোগ্রাফির স্কুলও। শেষ পর্যন্ত এই প্রস্তাব মনঃপূত হয় দস্তয়েভস্কির। ‘আমি কখনও এর আগে এভাবে মুখে বলি নি, যাই হোক চেষ্টা করা যেতেই পারে....ধন্যবাদ।’ সম্মতি পেয়ে Milyukov যোগাযোগ করেন একজন স্বনামধন্য স্টেনোগ্রাফির শিক্ষক P.M. Olkhin এর সাথে, যিনি তার সেরা ছাত্রীটিকে এ কাজে মনোনীত করেন যার নাম Anna Grigoryevna Snitkina। তারপর বাকিটা ইতিহাস।

নতুন উপন্যাসের অংশ মুখে মুখে বলতে থাকেন দস্তয়েভস্কি, short handএ লিখে নিতে থাকেন আনা, পরের দিন বিস্তৃতভাবে সেগুলি লিখে আনেন আনা। দীর্ঘ ডিক্টেশনের মাঝে একটু বিরতিতে নিজের জীবনের কথা বলতেন দস্তয়েভস্কি, মুগ্ধ হয়ে শুনে যেতেন আনা, কখনও বলতেন নিজের কথা, এভাবেই কখন যেন দুটি অসমবয়সী মানুষ এসে দাঁড়ালেন পরস্পরের কাছাকাছি। একদিন আর থাকতে না পেরে দস্তয়েভস্কি জিজ্ঞাসা করেই ফেললেন আনাকে, কী বিশাল খোঁপা তুমি পরে আছ! নকল কেশবিন্যাস পরতে তোমার লজ্জা করে না? আনা কিছুটা রাগতঃ স্বরেই উত্তর দেন, এটা আমার নকল চুল নয়, এ আমার নিজস্ব...। স্পষ্টতই বিব্রত দস্তয়েভস্কি! মুখ যাই বলুক না কেন, সেন্টপিটার্সবার্গের পথের ধুলোয়, চোখের চাউনিতে, ছোট ছোট স্পর্শে, জানালার বাইরে ঝরে পড়া তুষারের হিমে, স্তুপাকৃতি বইয়ের মাঝে, মোমবাতির আলোয় লেখা হতে থাকল অন্য কোনো রূপকথা। যে ঔপন্যাসিকের প্রধান চরিত্ররা প্রায় সকলেই উদভ্রান্ত, দুঃখী, পাপবোধে জর্জরিত, হয়তো বা চন্দ্রাহত, যে ঔপন্যাসিক নিজেই অসুস্থ, ঋণে জর্জরিত, জুয়ায় আসক্ত, তাঁর কাছেও প্রেম এসে দাঁড়াল নিঃশব্দ চরণে। পাঠক, আমদের কারো সাথেও কী এমন ঘটেনি কখনও? জীবনের সব কিছুই কি নির্ধারিত নিয়মে চলে?       

“But how could you live and have no story to tell?”
                    ―  White Nights

আনা গ্রিগরিয়েভনা দস্তয়েভস্কির মৃত্যু হয় ১৯১৮ সালে। দস্তয়েভস্কি বিদায় নিয়েছেন তার অনেক আগেই, ১৮৮৫ সালে। তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত আনা বলেছিলেন যে তাঁর নিজস্ব জীবন শেষ হয়ে গেল এবং তিনি চিরতরে অনাথ হলেন। তখন তাঁর বয়স মাত্র পঁয়ত্রিশ বছর। জীবনের পরবর্তী সাঁইত্রিশ বছর তিনি নিজেকে নিয়োজিত করবেন তাঁর স্বামীর সৃষ্টিকর্মের সংরক্ষণে।

বিনয়সহকারে সর্বসমক্ষে নিজের মনন ও মেধাকে অস্বীকার করলেও রুশ সাহিত্যে আনা গ্রিগরিয়েভনার অবদান অনস্বীকার্য, বিশেষতঃ দস্তয়েভস্কি চর্চার মূল সূত্রগুলোকে বেঁধে দিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। Orest Miller ও Strakhov এর সাথে  ‘Materials for a Biography of Dostoevsky’র প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছিলেন তিনি, জীবিতাবস্থায় যার একটিমাত্র খন্ড প্রকাশিত হতে পেরেছিল। দস্তয়েভস্কির একটি সম্পূর্ণ গ্রন্থতালিকাও প্রস্তুত করেছিলেন আনা। শুধু তাই নয়, সেই সময়ে দাঁড়িয়ে ইয়োরোপ ও এশিয়ায় বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত দস্তয়েভস্কির সাহিত্য বিষয়ক গ্রন্থের একটি তালিকাও প্রস্তুত করেছিলেন আনা যেখানে তালিকাভূক্ত গ্রন্থের সংখ্যা ছিল পাঁচ হাজারেরও বেশি! এখানেই শেষ নয়, দস্তয়েভস্কি রচনাবলীরও প্রকাশক ছিলেন আনা যার ক্রমান্বয়ে সাতটি সংস্করণ হয়েছিল রুশদেশে। মস্কো হিস্টোরিকাল মিউজিয়ামে একটি বিশেষ বিভাগের সূচনা করেন তিনি যেখানে দস্তয়েভস্কির মূল পান্ডুলিপি, চিঠিপত্র ও নোটবইগুলি সংরক্ষিত হয়। এমনকি ১৯১৬-১৭র অগ্নিগর্ভ সময়ে, যখন সমগ্র দেশ বিপ্লবের আঁচে উত্তাল, আনা মনোযোগী ছাত্রীর একাগ্রতা নিয়ে নিয়মিত ছুটেছেন গ্রন্থাগারে তাঁর স্মৃতিচারণের তথ্য যাচাইয়ের প্রয়াসে।

[প্রাসঙ্গিক/অপ্রাসঙ্গিকভাবে মনে পড়ে যায় জীবনানন্দ যদি এমন সহধর্মিণী পেতেন, তবে কবির বহু অপ্রকাশিত রচনা মৃত্যুপরবর্তী সময়ে এভাবে কালের গর্ভে তলিয়ে যেত না!] 

রাশিয়ায় আনা গ্রিগরিয়েভনার স্মৃতিচারণ প্রথম প্রকাশিত হয় তাঁর মৃত্যুর সাত বছর পর, ১৯২৫ সালে, প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই তা যথেষ্ট আলোড়ন সৃষ্টি করে ও অচিরেই প্রথম শ্রেণির সাহিত্যকীর্তি বলে বিবেচিত হয় পাঠকমহলে। ১৯২৫এ প্রকাশিত গ্রন্থটির প্রথম সংস্করণের সম্পাদক ছিলেন প্রখ্যাত দস্তয়েভস্কি বিষেশজ্ঞ লিওনিদ গ্রসম্যান।

১৮৬৬ থেকে ১৮৮১, আনার জীবনের যে চোদ্দ বছর কেটেছিল দস্তয়েভস্কির সাহচর্যে, তারই বিবরণ আনা ধরে রেখেছিলেন পান্ডুলিপির সাত’শরও অধিক পাতায় যার থেকে গ্রসম্যান প্রস্তুত করেন গ্রন্থটি।প্রাথমিক যে অসুবিধার মধ্যে গ্রসম্যানকে পড়তে হয় তার মধ্যে একটি ছিল -তিরিশটিরও বেশি খসড়া নোটবুকের উপর ভিত্তি করে আনা নিজে যে মূল পান্ডুলিপিটি হাতে লিখে তৈরী করেছিলেন, তাতে ছোটবড় নানা আকারের বিরানব্বইটি অধ্যায় ছিল। অধ্যায়গুলি কালানুক্রমিক তো ছিলই না, উপরন্তু কোনো কোনো অধ্যায়ের শিরোনামও ছিল না, শুধুমাত্র সংখ্যা দ্বারা চিহ্নিত ছিল। অনেক ক্ষেত্রেই আনা একই ঘটনাকে বিভিন্ন ধরণে লিখে রেখে গেছেন নিজের পছন্দের ধারাটিকে না জানিয়ে। গ্রসম্যান এইসব ক্ষেত্রে সহজতম বর্ণনাটিকেই প্রাধান্য দিয়েছিলেন সম্পাদনার সময়। এর সাথে গ্রসম্যান যুক্ত করেছিলেন একটি অংশ যাকে আনা বলতেন ‘Memoirists’ এবং আনার দ্বারা অস্বীকৃত, দস্তয়েভস্কির বিরুদ্ধে নিকোলাই স্ট্রাখভের করা একটি কুখ্যাত অভিযোগ।

এরপর ১৯৭১ সালে S.V.Belov ও V.A.Tunimanov এর সম্পাদনায় মস্কোতে আনা দস্তয়েভস্কির স্মৃতিচারণটি প্রকাশিত হয় নব কলেবরে যাতে দস্তয়েভস্কি পরিবারের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলি বারোটি বিস্তৃত কালানুক্রমিক অধ্যায়ে সজ্জিত হয়। এই সম্পাদনার ফলে গ্রসম্যানের গ্রন্থটিতে থাকা অনাবশ্যক কিছু অংশ বর্জিত হয় এবং বহু অংশ স্বাভাবিকভাবেই পুনর্বিন্যস্ত হয়।

Beatrice Stillmanএর ইংরেজি অনুবাদে এই গ্রন্থটিই প্রকাশিত হয় ১৯৭৫ সালে, নিউইয়র্কের Liveright Publishing Corporation থেকে।

“Pain and suffering are always inevitable for a large intelligence and a deep heart.”
                                     ― Crime and Punishment

জীবনের শেষ দিনগুলি বড়ই ট্রাজিক আনার। পরিবারের সাথে বিচ্ছিন্ন, মানসিকভাবে নিঃসঙ্গ অবস্থায় দিন কাটিয়েছেন তিনি। Beatrice Stillman জানিয়েছেন ১৯১৭র মে মাসে পেট্রোগ্রাদ ছেড়ে ককেশাসের গ্রীষ্মাবাসের দিকে যাত্রা করেন আনা। সেখানে এক ভয়ানক ধরণের ম্যালেরিয়ার কবলে পড়েন তিনি। কিছুটা সুস্থ হয়ে পেট্রোগ্রাদে ফেরার চেষ্টা করে ব্যার্থ হন তিনি, সমগ্র রাশিয়া জুড়ে তখন প্রথম মহাযুদ্ধের কালো ছায়া। ১৯১৮র বসন্তে জার্মানীর আগ্রাসনে মস্কোর সাথে যোগাযোগ ছিন্ন হয় ককেশাসের, মস্কো থেকে ছেলে অল্প অল্প করে টাকা পাঠাতো মা’কে, সেখানে ফিরতে চেয়েছিলেন আনা, পারেন নি। এরই মধ্যে ছোটো ছোটো কতগুলো স্ট্রোক হয়ে যায় তাঁর, স্বাস্থ্য আরও ভেঙে পড়ে। ইয়াল্টায় থাকতে শুরু করেন তিনি। দারিদ্রের চরম সীমায় পৌছে যান এক সময়, প্রায়শই অর্ধভূক্ত অবস্থায় দিন কাটতে থাকে তাঁর। একদিন খিদের জ্বালায় হঠাৎ পেয়ে যাওয়া দু’পাউন্ড রুটি পুরোটাই খেয়ে ফেলেছিলেন তিনি। এর ন’দিন বাদে, আন্ত্রিক প্রদাহে, সম্পূর্ণ একাকী আনার মৃত্যু হয় ইয়াল্টায়। ঘরে ফেরা আর হল না তাঁর।সেখানেই সমাধিস্থ করা হয় তাঁকে। কেন জানি মনে হয় দস্তয়েভস্কির দ্বিতীয় স্ত্রীর ট্রাজিক জীবনও কোথাও গিয়ে এক হয়ে যায় লেখকের সৃষ্টি করা নানা চরিত্রের সাথে।

(১৯৬৮তে, অর্থাৎ আনার মৃত্যুর পঞ্চাশ বছর পর তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী সেন্ট পিটার্সবার্গে দস্তয়েভস্কির সমাধির পাশেই তাঁকে পুনর্বার সমাধিস্থ করা হয় তাঁর দৌহিত্রের অক্লান্ত প্রচেষ্টায়)